বন ধনিয়া ফুলের বিস্তার:উপকারের আড়ালে লুকিয়ে মারাত্মক ক্ষতি

বন ধনিয়া ফুলের বিস্তার:উপকারের আড়ালে লুকিয়ে মারাত্মক ক্ষতি
Views: 12 Like (0) Dislike (0) Shares (1)

বন ফুলের বিস্তার:উপকারের আড়ালে লুকিয়ে মারাত্মক ক্ষতি বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় সম্প্রতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ছোট সাদা ফুলওয়ালা এক ধরনের গাছ — বন ধনিয়া বা ফুলঝুরি ঘাস। দেখতে নিরীহ হলেও এই গাছ আসলে কৃষি ও স্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বৈজ্ঞানিকভাবে এর নাম Parthenium hysterophorus। মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার উদ্ভিদ হলেও এখন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশেই এটি ছড়িয়ে পড়েছে। রাস্তার ধারে, পতিত জমি বা খোলা জায়গায় এই গাছ সহজেই জন্মে যায় এবং দ্রুত বংশবিস্তার করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বন ধনিয়া গাছের একটি বিশেষ গন্ধ ও পরাগরেণু (pollen) মানুষের ত্বকে অ্যালার্জি, চুলকানি, এমনকি হাঁপানির মতো শ্বাসকষ্টের সমস্যা তৈরি করতে পারে। গরু বা ছাগল যদি এই গাছ খায়, তাদের দুধে দুর্গন্ধ ও তেতো ভাব আসে। ফলে অনেক সময় প্রাণীরও বিষক্রিয়া দেখা দেয়।

এদিকে কৃষি গবেষকরা বলছেন, এই গাছ চাষের জমিতে ঢুকে ফসলের পুষ্টি কেড়ে নেয়, ফলে উৎপাদন কমে যায়। একবার কোনো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এটি স্থানীয় উদ্ভিদের জায়গা দখল করে নেয়, যা জীববৈচিত্র্যের জন্যও হুমকি।

তবে সব দিকই নেতিবাচক নয়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বন ধনিয়া গাছের নির্যাসে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে, যা ভবিষ্যতে জৈব কীটনাশক বা ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগানো যেতে পারে। অনেক কৃষক এর পচা অংশ জৈব সার হিসেবেও ব্যবহার করেন।

বন ধনিয়া ফুলের বিস্তার:উপকারের আড়ালে লুকিয়ে মারাত্মক ক্ষতি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, বাড়ির বাগান বা ফসলের জমিতে এই গাছ দেখা গেলে গ্লাভস পরে তুলে ফেলা উচিত। আগুনে পোড়ানো যাবে না, কারণ এর ধোঁয়াও শ্বাসযন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বলছে, নিয়ন্ত্রণ না করলে বন ধনিয়া দেশের কৃষি উৎপাদন ও পরিবেশের জন্য বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। সতর্কতা ও সচেতনতাই এখন এই ‘অদৃশ্য আগাছা’ ঠেকানোর একমাত্র উপায়।