
আল-আকসা মসজিদের কিছু অংশ ধসে পড়ার শঙ্কা ইসরায়েলিযুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর অন্তত ৫০ বার লঙ্ঘন করলো ইসরায়েল দখলদার বাহিনীর গোপনে লাগাতার সুড়ঙ্গ খননের কারণে মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল-আকসা মসজিদের কিছু অংশ ধসে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জেরুজালেম প্রশাসন। পাশাপাশি, শহরের শেখ জাররাহ মহল্লায় বসতি সম্প্রসারণ ও স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের চলাচলে নতুন বাধা আরোপের অভিযোগও করা হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জেরুজালেম প্রশাসন সতর্ক করে জানায়, আল-আকসা মসজিদের নিচে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের পরিচালিত খনন কাজ মসজিদের স্থিতিশীলতা এবং পুরনো শহরের ঐতিহাসিক ইসলামিক নিদর্শনগুলোর জন্য সরাসরি হুমকি হয়ে উঠেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এসব খনন কার্যক্রম আন্তর্জাতিক তদারকি ছাড়াই গোপনে পরিচালিত হচ্ছে, যার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।
প্রশাসনের অভিযোগ, ইসরায়েল শেখ জাররাহ মহল্লায় ‘‘মিথ্যা ধর্মীয় দাবির’’ অজুহাতে বসতি সম্প্রসারণ ও দখলকরণ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। গত দুই দিনে ওই এলাকায় কঠোর সামরিক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে সাধারণ ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। সেনারা এলাকাটি ঘিরে ফেলে প্রধান সড়কগুলো বন্ধ করে দিয়েছে এবং একাধিক তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে, ফলে স্থানীয়দের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনারা বসতি স্থাপনকারীদের ‘শিমন দ্য রাইটিয়াসের সমাধি’ নামে পরিচিত একটি স্থানে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে, যেখানে তাঁরা ধর্মীয় আচার পালনের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত তাবুতে জড়ো হয়েছেন। অথচ এই স্থানের কোনো ঐতিহাসিক বা প্রত্নতাত্ত্বিক ভিত্তি নেই বলেই জানায় জেরুজালেম প্রশাসন।
প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী, ঐতিহাসিক দলিলপত্র প্রমাণ করে যে, বিতর্কিত এই স্থানটি ১৭৩৩ সালে সুফি পণ্ডিত শেখ সিদ্দিক আস-সাদীর মালিকানাধীন ছিল, যিনি এটি খলওয়া (আধ্যাত্মিক নির্জনতা) ও ধর্মীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকের স্থান হিসেবে ব্যবহার করতেন। এর সঙ্গে কোনো প্রাচীন ইহুদি চরিত্রের সংযোগের প্রমাণ নেই, বরং এটি সম্পূর্ণরূপে একটি নির্মিত গল্প।
জেরুজালেম গভর্নরেটের মতে, এসব তৎপরতা মূলত ফিলিস্তিনি উপস্থিতিকে মুছে দিয়ে বসতি স্থাপনকারীদের আধিপত্য কায়েমের অংশ। এটি পুরনো জেরুজালেমের আরব-ইসলামী চরিত্র মুছে ফেলার একটি পরিকল্পিত পদক্ষেপ বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
আল-আকসা মসজিদের কিছু অংশ ধসে পড়ার শঙ্কা বিবৃতির শেষাংশে তারা জোর দিয়ে জানায়, শেখ জাররাহ মহল্লা ও আশপাশের এলাকার মালিকানা সংক্রান্ত আসল দলিল হলো স্থানীয় পরিবারের সংরক্ষিত ঐতিহাসিক নথিপত্র, শরিয়াহ আদালতের রায় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশেষত ইউনেস্কোর স্বীকৃত দলিলসমূহ—যা ফিলিস্তিনিদের অধিকার প্রমাণ করে।
সূত্র : ওয়াফা নিউজ এজেন্সি, আল জাজিরা







