গাজায় প্রতি পাঁচ শিশুর একজন নিয়মিত টিকা থেকে বঞ্চিত

গাজায় প্রতি পাঁচ শিশুর একজন নিয়মিত টিকা থেকে বঞ্চিত
Views: 16 Like (0) Dislike (0) Shares (3)

গাজায় প্রতি পাঁচ শিশুর একজন নিয়মিত টিকা থেকে বঞ্চিত গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ ও অবরোধের কারণে গত দুই বছরে প্রতি পাঁচজন শিশুর একজন নিয়মিত টিকা নিতে পারেনি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (UNRWA)।শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, “গাজার প্রতি পাঁচটি শিশুর মধ্যে একটি শিশু প্রয়োজনীয় টিকা পায়নি।” আগামী রবিবার থেকে গাজার ১৫০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, UNRWA এবং ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় এই কর্মসূচি পরিচালিত হবে।

সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, এই অভিযানের লক্ষ্য ৪৪ হাজার শিশুকে টিকা প্রদান ও অপুষ্টি পরীক্ষার আওতায় আনা। ফিলিস্তিনি কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর এপ্রিল ২০২৫ সালের তথ্য অনুযায়ী, গাজার মোট জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশই শিশু — প্রায় ৯ লাখ ৮০ হাজার।ইসরায়েলের দুই বছরের অবরোধ ও হামলায় গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা কার্যত ধসে পড়ে, টিকাদান কর্মসূচিও বন্ধ হয়ে যায়। যুদ্ধের আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও UNRWA মাসিকভাবে টিকা প্রদান করত, কিন্তু ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞা ও চিকিৎসা সামগ্রী আমদানি বন্ধের কারণে টিকার সরবরাহ শেষ হয়ে যায়।

গত দুই বছরে কেবল দুটি জরুরি পোলিও টিকাদান অভিযান চালানো সম্ভব হয়েছিল — ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর ও ২০২৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। UNRWA জানিয়েছে, নতুন এই টিকাদান অভিযান গাজার ২৪টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও চিকিৎসা পয়েন্টের মাধ্যমে পরিচালিত হবে, যাতে শিশুস্বাস্থ্য সেবা পুনরুদ্ধার করা যায়। গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও গাজার স্বাস্থ্যখাত এখনো ভয়াবহ সংকটে রয়েছে। সরঞ্জাম, ওষুধ ও চিকিৎসাকেন্দ্রের ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের মহাপরিচালক ইসমাইল আল-থাওবেত জানিয়েছেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির মানবিক শর্ত ভঙ্গ করছে এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।

অন্যদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বারশ বলেন, ইসরায়েল শিশুদের অপুষ্টি চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ওষুধ ঢুকতে দিচ্ছে না, শুধু সীমিত প্রাথমিক ওষুধ সরবরাহ করছে, কিন্তু অপারেশন থিয়েটার ও জরুরি বিভাগের জন্য কিছুই আসছে না। ২০২৪ সালের মে মাস থেকে রাফাহ সীমান্তের ফিলিস্তিনি অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেখানে সব স্থাপনা ধ্বংস ও আগুন দিয়ে পোড়ানোর পর ইসরায়েল ওই পথ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে গাজার মানবিক ও চিকিৎসা সংকট আরও গভীর হয়েছে।

গাজায় প্রতি পাঁচ শিশুর একজন নিয়মিত টিকা থেকে বঞ্চিত ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েল প্রায় ৬৯ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছে আরও এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ।